রাউজানে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধে সুলাল চৌধুরী (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে খুনের দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালতে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এইচ এম শফিকুল ইসলাম এ রায় দেন। খুনের শিকার সুলাল চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজন উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। একই ইউনিয়নের যুগীরহাট চালবাজারে অভয়া ঔষধালয় নামে তাঁর একটি আয়ূবের্দিক ফার্মেসি ছিল।
রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত জেলা পিপি অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি একই গ্রামের মিঠু চৌধুরী, সুমন চৌধুরী ও দেলোয়ার হোসেন ও এরশাদ হোসেনকে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সুদীপ চৌধুরী নামে আরেক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রিকশাচালক মো. ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
পিপি অঞ্জন বিশ্বাস জানান, দণ্ডিতদের মধ্যে দেলোয়ার এবং খালাস পাওয়া ইলিয়াস রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। দেলোয়ারকে সাজামূলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পলাতক তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অঞ্জন বিশ্বাস।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৫ জুন রাত ৯টার দিকে রিকশায় করে ফার্মেসি থেকে বাড়িতে ফেরার পথে তাকে নোয়াজিশপুর-চিকদাইর সড়কে প্রিয়তোষ কবিরাজের বাড়ি সংলগ্ন ব্রিজের সামনে কুপিয়ে খুন করে আসামিরা। এরপর তার লাশ গুমের উদ্দেশে ব্রিজের নিচে খালের মধ্যে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে। গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় তার স্ত্রী ও সন্তান স্থানীয়দের নিয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে খালে লাশের সন্ধান পান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সুলালের ছেলে সৌরভ চৌধুরী বাদী হয়ে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। দায়ের হওয়া মামলা তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগ গঠনের পর মোট পনেরো জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দিয়েছেন।