রোহিঙ্গা যুবককে ভালোবেসে বিয়ে করে প্রতারণার শিকার ফেঁসে গেছে বাংলাদেশী এক নারী সিরাজ খাতুন (৩৩)। ২৬ দিন কারাভোগ ও নানা নাটকীয়তায় পর অবশেষে ৯ মাসের শিশুসহ জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সেই নারী।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
রাঙ্গুনিয়ার মেয়ে সিরাজ খাতুন (৩৩) ১০ বছর আগে প্রেমের টানে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন সিদ্দিক আহমদকে। সিরাজ খাতুনের বাড়ির পাশের মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন সিদ্দিক। বিয়ের পর ঘটনাচক্রে সিরাজ খাতুন জানতে পারেন তার স্বামী সিদ্দিক একজন রোহিঙ্গা। পরে স্বামীর সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঠাঁই হয় তার। ওই সময় বাড়তি ভাতা পাওয়ার লোভে সিরাজ খাতুনকে রোহিঙ্গা হিসেবে ক্যাম্পে নিবন্ধন করেন সিদ্দিক।
কিন্তু একপর্যায়ে স্বামী সিদ্দিক ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গেলে ফের রাঙ্গুনিয়া ফিরে আসেন সিরাজ খাতুন। এরই মধ্যে গত ৩ জুন বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করাতে গেলে তার আঙুলের ছাপ রোহিঙ্গাদের তালিকার সঙ্গে মিলে যায়। এরপর রোহিঙ্গা হিসেবে গ্রেফতার হয়ে সিরাজ খাতুন যান কারাগারে। এসময় তার ৯ মাসের শিশুকেও মায়ের সাথে কারাগারে যেতে হয়।
তবে বাঙ্গালী নারীর ‘রোহিঙ্গা’ হয়ে যাওয়ার এই বিষয়টিকে সামনে এনে আদালতে আইনি লড়াই শুরু করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান।
তার আইনজীবি এএম জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘জামিননামায় স্বাক্ষর না পাওয়ায় জামিনযোগ্য ধারায় সিরাজ খাতুন এবং তার দুগ্ধপোষ্য নয় মাসের শিশু গত ২৬ দিন ধরে হাজতবাস করছেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদার তার জামিননামায় স্বাক্ষর করার পর কারামুক্ত হন তিনি।’
গত ২০ জুন তার জামিনের শর্ত পরিবর্তন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের স্থলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদারের জিম্মায় জামিননামা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান। এর পর গত সোমবার তার জামিননামায় স্বাক্ষর করেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার।
এর আগে গত ১৬ জুন সিরাজ খাতুনকে জামিন দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৬ষ্ঠ আদালতের বিচারক মেহনাজ রহমান। মামলায় অভিযুক্ত মা ও শিশুকে বিনা খরচে আইনি সহায়তা দিচ্ছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইট ফাউন্ডেশন বিএইচআরএফ।