সারাদেশের মতো চট্টগ্রামের তিন উপজেলায়ও দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও দ্বিতীয় ধাপের এ নির্বাচনে চার উপজেলা হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও রাউজানে সবকটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ায় বাকি তিনটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবার এ তিন উপজেলার মধ্যে হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলায় সবকটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও একই কারণে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়ও চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হয়নি। রাঙ্গুনিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন।
মঙ্গলবার (২১ মে ) সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে ভোট গ্রহন চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এখন ভোট গণনা চলছে।
সরেজমিনে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়ায় উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিত খুবই কম। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা ছাড়াই ভোট দিচ্ছেন সাধারণ ভোটাররা।
নির্বাচন কমিশনের স্মার্ট অ্যাপের তথ্যানুযায়ী, দুপুর ২টা পর্যন্ত হাটহাজারী ১০৬টি কেন্দ্রের বিপরীতে ৪০ কেন্দ্রের প্রদত্ত ভোটের হার মাত্র ১৮ শতাংশ। এছাড়া এই উপজেলায় সকাল ১০টা পর্যন্ত ৪৭ কেন্দ্রে ৮ শতাংশ ভোট পড়ে। অন্যদিকে, একই অবস্থা ফটিকছড়ি উপজেলায়ও। এ উপজেলায় দুপুর ২টা পর্যন্ত ১৪২ কেন্দ্রের বিপরীতে ৯৫টি কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের হার ছিল ১৪ শতাংশ। এ উপজেলায় প্রথম দুই ঘণ্টায় ১১০টি কেন্দ্রে প্রদত্ত ভোটের হার ছিল মাত্র ৬ শতাংশ। রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়ও দুপুর ২টা পর্যন্ত ৯৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩১টি কেন্দ্র প্রদত্ত ভোটের হার মাত্র ৯ শতাংশ জানা গেছে।
এদিকে মঙ্গলবার ফটিকছড়িতে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের দায়িত্ব সুন্দর এবং সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। আমরা সেই কাজটি করছি। যাতে করে ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে। বিশ্বাস করতে পারেন এখানে সুষ্টু নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনের চেয়ে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন সুন্দর ও সুষ্ঠু হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, আজকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। আমরা হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির বেশ কিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। ভোটের পরিবেশ খুবই ভালো। সুষ্ঠু এবং সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। জনসাধারণ ভোট দিতে আসছে। কিছু কিছু কেন্দ্রে কাস্টিং কম হয়েছে, আবার কিছু কিছু কেন্দ্রে বেশি হয়েছে। মহিলাদের কিছু কেন্দ্রে কম, এটি অতিরিক্ত গরমের কারণেও হতে পারে।
এ সময় চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রির্টানিং অফিসার রাকিব হাসান, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রির্টানিং অফিসার মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কেন্দ্র পরিদর্শনে আসা ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী বখতেয়ার সাঈদ ইরান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম। গরমের কারণে হয়তো অনেকে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। বেলা বাড়লে হয়তো ভোটার বাড়তে পারে।
দুজনেই একই দলের পা্রর্থী সেক্ষেত্রে নির্বাচনে হেরে গেলে পরাজয় মেনে নেবেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অবশ্যই যিনি জয়ী হবেন তাঁকে ফুলেরৈ মালা দিয়ে বরণ করে নেয়া হবে। নিজের পরাজয় সহজ ভাবে মেনে নিব।
এবারে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে তিন উপজেলায় মোট ভোটার ১১ লাখ ২০ হাজার ৭৩৪ জন। এর মধ্যে হাটহাজারী উপজেলায় ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ জন। এতে পুরুষ ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৩ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮০৫ জন। অন্যদিকে ফটিকছড়ি উপজেলায় ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৬০৭ জন। যার মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩৮ জন, নারী ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৬৭ জন। আরেক উপজেলা রাঙ্গুনিয়ায় মোট ভোটার ২লাখ ৯৮ হাজার ৬৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৮ হাজার ১২২ জন এবং নারী ১ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৭ জন।
তিন উপজেলায় ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৪৩টি। এরমধ্যে হাটহাজারীতে ভোট কেন্দ্র ১০৬টি, ফটিছড়িতে ১৪২টি এবং রাঙ্গুনিয়ায় ৯৫টি। ভোটগ্রহণে জন্য তিন উপজেলা নিয়োগ করা হয়েছে ৯ হাজার ৬৭৪ জন কর্মকর্তা।