ঐতিহ্যবাহী লালদীঘির আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসরে এবার সমঝোতার ভিত্তিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ বলী। একই এলাকার বলী মো. রাশেদকে পরাজিত করেন বাঘা শরীফ। বাঘা শরীফের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায়। গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলী এবারের খেলায় অংশ নেননি।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হন বাঘা শরীফ ও মোহাম্মদ রাশেদ।
এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন রাশেদ ও রাঙ্গামাটির সৃজন চাকমা। প্রথম সেমিফাইনারে জয়ী হয়ে রাশেদ ফাইনালে ওঠেন। অপর সেমিফাইনালে বাঘা শরীফের প্রতিপক্ষ ছিলেন রাসেল। এর আগে বিকেল চারটায় শুরু হয় বলী খেলার ১১৫তম আসর। এতে দেশের বিভিন্ন জেলার নানা বয়সী ৮৪ জন বলী অংশ নেন। খেলা শুরুর আগে এ বারের আসর থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেন গত দুইবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলী এবং তরিকুল ইসলাম জীবন বলী। ১১৫তম আসরের বাঘা শরীফকে সুযোগ করে দিতে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেন বলে জানান তারা।
ফাইনালে প্রায় ১১ মিনিট হাড্ডাহাড্ডি লাড়াইয়ের পর বাঘা শরীফের হাত উচিয়ে ধরেন রাশেদ বলী। এসময় চ্যাম্পিয়ন শরীফ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলীখেলায় অংশ না নিয়ে আমাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।
অন্যদিকে রানার আপ মো. রাশেদ বলেন, আমি আগে বলীখেলায় অংশ নেইনি। আমাকে জব্বারের বলী খেলায় নিয়ে এসেছেন শরীফ ভাই। শরীফ ভাই আমার সিনিয়র। তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছি। চ্যাম্পিয়ন শরীফ ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। আমার জন্যেও দোয়া করবেন।
অবশ্য চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ শুতেই পুরস্কার নিয়ে এক প্রকার দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। ফলে গণমাধ্যম কর্মীরা তার কোন প্রতিক্রিয়া নিতে পারেননি।
ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার ১৯০৯ সাল, বাংলা ১৩১৬ সালের ১২ বৈশাখ প্রচলন করেন ‘বলীখেলা’। কালক্রমে এটি বিখ্যাত হয়ে ওঠে ‘জব্বারের বলী খেলা’ নামে। বলী খেলাকে ঘিরে লালদীঘি ও আশপাশের কয়েক বর্গমাইল জুড়ে বসে তিন দিনব্যাপী লোকজ মেলা।