রাত পোহালেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি জোর প্রচারণা, কিছু কিছু এলাকায় সংঘাত-সংঘর্ষসহ নানা কারণে আলোচিত এ নির্বাচনে সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
রোববার (৭ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হচ্ছে ভোটযুদ্ধ, চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এবার চট্টগ্রামের ১৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২৫ জন প্রার্থী। শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টায় প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা ভোট উৎসবের।
এবারের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত, কিছু বাম দল এবং তাদের সমমনা দলগুলো অংশ নিচ্ছে না। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পথ খোলা রাখায় বিপুলসংখ্যক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ সব মিলিয়ে ২৮টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা এবার ভোটে অংশ নিচ্ছেন।
এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে পাঁচস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সন্দ্বীপে বিজিবির পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে নৌবাহিনী।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে এবার মোট ভোটার ৬৩ লাখ ১৪ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩২ লাখ ৮৯ হাজার ৫৯০ জন, নারী ভোটার ৩০ লাখ ২৪ হাজার ৭৫১ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৫৬ জন।
চট্টগ্রামের সব আসন মিলিয়ে মোট ভোটকেন্দ্র ২০২৩টি এবং ভোট গ্রহণ কক্ষ ১৩ হাজার ৭৩২টি। প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৪৩ হাজার ২১৯ জন। ১০ শতাংশ অতিরিক্তসহ ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন মোট ৪৭ হাজার ৫৪৪ জন।
এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার ২ হাজার ২৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৪৬৩টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে; শতাংশের হিসেবে যা ৭২ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে জেলায় ১০১৩টি কেন্দ্র এবং নগরীতে ৪৫০টি কেন্দ্র ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এসব কেন্দ্রের নাম ও তালিকা নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। সে হিসেবে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচনে নগর পুলিশের ৪ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানা গেছে। আর জেলা পুলিশের মোতায়েন থাকবে ৪ হাজার ৫০০ সদস্য।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের ৪ হাজার ৫০০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মোটরসাইকেল চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে বিজিবি, আনসার কোস্ট গার্ড দায়িত্ব পালন করবে। এখন পর্যন্ত বড় কোনো নাশকতা ঘটনা ঘটেনি। উৎসাহ, উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে ভোটকেন্দ্রে মানুষ ভোট দিতে পারবে। তবুও আমরা সতর্ক আছি যে কোনো নাশকতা মোকাবিলায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ বিশেষ করে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও পটিয়া আসনে আমরা আলাদাভাবে নজর রেখেছি। সে সঙ্গে আলাদা ফোর্সও রেডি করেছি। কোনো ভোটারকে যদি কেউ বাধা দেয়, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। কেউ ভোটকেন্দ্র দখল বা দখলের সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারবে না।’