করোনা: দেশে এক মাসের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে প্রস্তুত আবুল খায়ের গ্রুপ

ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের মতো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি

দেশে করোনার ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট-এর সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। আর উচ্চ সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে অন্তত পঞ্চাশটিরও বেশি জেলায়।

এমন পরিস্থিতিতে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে আবারো পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে দেশের সর্ববৃহৎ অক্সিজেন উৎপাদনকারী আবুল খায়ের গ্রুপ-এর অংগ প্রতিষ্ঠান একেএস অক্সিজেন প্ল্যান্ট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এখন তাদের যে পরিমাণ তরল অক্সিজেনের মজুদ আছে, তা দিয়ে সারাদেশের এক মাসের অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ সম্ভব।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির অক্সিজেন উৎপাদন পরিস্থিতি সরেজমিনদেখতে যান একদল সাংবাদিক। এসময় আবুল খায়ের গ্রুপ-এর কর্মকর্তারা জানান, গত বছর করোনার পিক আওয়ারে যখন সারাদেশে অক্সিজেনের অভাবে রোগীদের মৃত্যুর মিছিল ঠেকানো যাচ্ছিল না, তখন নিজেদের দৈনিক ২৬০ টন উৎপাদন ক্ষমতার অক্সিজেন প্ল্যান্ট উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা দেশের মানুষকে আশ্বস্থ করে বলেন, পরিস্থিতির আলোকে অক্সিজেন উৎপাদন, উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং প্রস্তুতির কারণে দেশে করোনা রোগীদের অক্সিজেনের সংকট হবে না। প্রয়োজনে নিজেদের, অক্সিজেন নির্ভর পণ্য উৎপাদন বন্ধ রেখে হলেও জীবন বাঁচাবে করোনা রোগীদের। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের প্রতিষ্ঠান করোনাক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা ।

আবুল খায়ের গ্রুপ-এর অক্সিজেন প্ল্যান্টের জিএম একেএম নজরুল ইসলাম জানান, তাদের প্ল্যান্ট থেকে বিনামূল্যে এ পর্যন্ত ১৮ হাজারেরও বেশি রোগী ও হাসপাতালকে অক্সিজেন সরবরাহ হরা হয়। ২০টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নির্মাণ করে দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয় বিনামূল্যে।

আবুল খায়ের গ্রুপ-এর ডিজিএম মো. সামছুদ্দোহা জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হবার পর তারা অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা আরো দ্রুত ও ত্বরানন্বিত করেন। সিলিন্ডার রিফিল করা ছাড়াও তারা শুরু করেন ভাল্ক আকারে তরল অক্সিজেন সরবরাহ।

ওই কর্মকর্তা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ৪/৫ মাস ধরে ভারত থেকে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশের সরকারী-বেসরকারী মেডিকেলে অক্সিজেন সরবরাহও সংকটে পড়ে। এই সংকট কাটাতে এগিয়ে আসে সীতাকুণ্ডে অবস্থিত একেএস-এর অক্সিজেন প্ল্যান্ট। দেশে মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহকারী লিন্ডা ও স্পেক্টাকে এখান থেকে প্রতিদিন বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে তরল অক্সিজেন। এখন পর্যন্ত যার পরিমাণ প্রায় ৮শ’ টন বা সাত লক্ষ লিটার বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
আগামী মাস থেকে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার সিলিন্ডার অক্সিজেন সরবরাহের জন্যও প্রতিষ্ঠানটি প্রস্তুত বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, বর্তমান পরিস্থিতি প্রতিষ্ঠানটির এখন মজুদ আছে ২৮০ টন তরল অক্সিজেন। যা দিয়ে সারাদেশের এক মাসের চাহিদা পূরণ সম্ভব।

প্রতিষ্ঠানটির সিইও মো. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, ডেল্টা, ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের মতো পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন অক্সিজেন উৎপাদন বাড়াতে। তিনি বলেন, দেশে মেডিকেল অক্সিজেনের যে চাহিদা হবে তার সিংহভাগ পূরণের চেষ্ঠা করবে তার কোম্পানী।

CoronaOxyzenআবুল খায়ের গ্রুপডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট