এরশাদ উল্লাহ ও শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র: চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম–৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ এবং ঢাকা–৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর সংঘটিত সশস্ত্র হামলাকে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এসব হামলার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিএনপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশটি নগরীর রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি নূর আহাম্মেদ সড়ক, লাভলেইন ও চেরাগী মোড় প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশ এক ভয়াবহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। নির্বাচনের মাঠে প্রতিযোগিতার বদলে ভয় ও সন্ত্রাসকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা জনগণের ভোটে আস্থা রাখে না, তারাই পরিকল্পিতভাবে প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলা চালিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। এরশাদ উল্লাহ ও শরীফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা প্রমাণ করে—দেশে এখনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন মানে শুধু ভোটের দিন নয়; সমান সুযোগ, নিরাপদ প্রচারণা এবং নির্ভীক রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয়। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমনে পরিকল্পিতভাবে ভয় দেখানো ও হামলা চালানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে জনগণের আস্থা নষ্ট হবে এবং নির্বাচন তার অর্থ হারাবে। রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়িত্ব সকল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে, অন্যথায় জনগণই এর জবাব দেবে। ভোটাধিকার রক্ষায় বিএনপি রাজপথে ছিল, আছে এবং প্রয়োজনে আরও শক্ত অবস্থান নেবে।
সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, স্বৈরাচার পতন হলেও দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ভঙ্গুর। পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচন ভণ্ডুল করার গভীর ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। নির্বাচনী প্রচারণার মধ্যেই মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলা এবং তফসিল ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র আক্রমণ—এসব কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
তিনি আরও বলেন, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়া এবং নির্বাচনপূর্ব সময়ে সংঘাত উসকে দেওয়াই এ ধরনের হামলার উদ্দেশ্য। ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সুপরিকল্পিত ও সুসংগঠিত হামলা, যা নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ। এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং নির্বাচনী পরিবেশে পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট আব্দুস সাত্তার, নিয়াজ মোহাম্মদ খান, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, শওকত আজম খাজা, শিহাব উদ্দিন মোবিন, মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু; মহানগর বিএনপির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, এস এম আবুল ফয়েজ, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, মাহবুব রানা, নুর উদ্দিন হোসেন নুরু, মোহাম্মদ আজম, মোহাম্মদ ইউসুফসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।