রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য নতুন আচরণবিধির গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার রাতে ইসি সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এ গেজেট প্রকাশ করা হয়।
নতুন আচরণবিধিতে পরিবেশবান্ধব প্রচারণা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে কঠোর বিধিনিষেধ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অপব্যবহারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
গেজেট অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ব্যানার ও বিলবোর্ড ব্যবহার করা যাবে, সেটিও পরিবেশবান্ধব উপকরণে তৈরি হতে হবে। যানবাহনসহ মিছিল, শোডাউন ও মশাল মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আচরণবিধি ভাঙলে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল করা যাবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। একই অপরাধে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকেও দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার
প্রথমবারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারের বিস্তারিত বিধান যুক্ত করা হয়েছে। প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট বা দলকে তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট নাম, আইডি ও ই-মেইল ঠিকানা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আগে থেকেই জমা দিতে হবে।
এআই বা অন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, বিকৃত ছবি, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য, মানহানিকর কনটেন্ট তৈরি বা প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতি ব্যবহার করে ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টাও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
প্রচারকাজে শেয়ার বা প্রকাশের আগে সব ধরনের তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে হবে বলে গেজেটে উল্লেখ রয়েছে।
বিদেশে প্রচার ও বিলবোর্ড ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা
কোনো দল বা প্রার্থী বিদেশে গিয়ে জনসভা, সভা-সমাবেশ বা প্রচারণা চালাতে পারবে না। একজন প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন; দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১৬ ফুট এবং প্রস্থ ৯ ফুট।
ডিজিটাল বিলবোর্ডে আলোর ব্যবহার করা গেলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে আলোকসজ্জা ও শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে রাখতে হবে। ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেটে পলিথিন বা পিভিসি উপাদান ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নতুন সংযোজন ও বিধান
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও সরকারি সুবিধাভোগী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ফলে তারা কোনো প্রার্থীর হয়ে প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।
প্রচারকালীন পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রার্থী ও দলকে আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।
এছাড়া গণমাধ্যমে প্রার্থীদের একসঙ্গে সংলাপ ও ইশতেহার ঘোষণা আয়োজনের বিধানও নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে।