বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস লেখা যাবে না —ড্যাবের অনুষ্ঠানে মেয়র ডা. শাহাদাত

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন ভূমিকা তুলে ধরে বিএনপি নেতা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, এ নেত্রীকে বাদ দিয়ে দেশের কোনো ইতিহাস রচিত হবে না।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারী হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে যখন আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে জামায়াত ইসলামীসহ অন্যান্য দলগুলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছিল, তখনই আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছিলেন, এরশাদের কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না । ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রামের লালদিঘীর ময়দানে খালেদা জিয়া এ ঘোষণা দেন। তখন শেখ হাসিনা একই কথা বললেও ঢাকায় গিয়ে তিনি এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেন। অথচ বেগম খালেদা জিয়া কখনো আপোষ করেননি।

তিনি শনিবার (২৩ আগষ্ট) বিকেলে নগরীর নাসিরাবাদ কনভেনশন হলে ড‍্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় চট্টগ্রাম শাখা ড্যাবের পক্ষ থেকে ভোটার এবং চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালে আন্দোলনের মুখে এরশাদ নির্বাচনের ঘোষণা দিলে খালেদা জিয়ার নির্দেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়, এর পরপরই আন্দোলন জোরদার হয়। সেসময় আমি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম।

তিন বলেন, ২৭ নভেম্বর নুর হোসেন, মোজাম্মেল, জিয়াদসহ অনেকে শহীদ হয়েছেন। বিএমএর যুগ্ম সম্পাদক ডা. মিলন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন, অথচ আওয়ামী লীগের মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন তার পাশে থেকেও অক্ষত ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদের পতন ঘটে।

চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বলেন, যদি বেগম খালেদা জিয়া এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে জোড়ালো ভূমিকা না রাখতেন তাহলে এরশাদের পতন এত সহজে সম্ভব হতো না । আর ১৯৯১ সালে জনগণ ভুল করেনি, খালেদা জিয়ার গলায় বিজয়ের মালা পড়িয়ে দিয়েছিল।

তিনি ১/১১ এর সময়কার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মাইনাস টু ফর্মূলা বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনাকে বিদেশে পাঠানো হয়। সে সময় মনের আনন্দে হাতে মেহেদি নিয়ে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়াকে বলা হলেও তিনি দেশ ত্যাগ করেননি। তিনি বলেছিলেন ‘যদি বাঁচতে হয় এ দেশেই বাঁচব, মরতে হলে এ দেশেই মরব।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহ যাকে সম্মান দিতে চান তাকেই সম্মান দেন। রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিপরীতে খালেদা জিয়া রানীর মতো বিদেশে গেছেন, রানীর মতো সম্মান নিয়ে দেশে ফিরেছেন।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে দেশনায়ক তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় এনে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করি।

ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহবায়ক ডা. এস এম সারোয়ার আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ডা. রিফাত কামাল রনির পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন ড‍্যাব চমেক শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দীন আহমেদ মানিক, মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আব্বাস উদ্দীন, উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. জসীম উদ্দীন, ডা. এম এ মান্নান, অধ‍্যাপক ডা. আনোয়ারুল হক চোধুরী, অধ‍্যাপক ডা. মো. আব্দুল মোত্তালিব, অধ্যাপক ডা. ইকবাল হোসেন, ডা. সুকান্ত ভট্টাচার্য, ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, ডা. মো. ইব্রাহিম চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা ড‍্যাবের সভাপতি ডা. নীলু কুমার তন্চংগ‍্যা, জেলা ড‍্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী সহ বিপুল সংখ্যক ড্যাব নেতৃবন্দ।