এমবিবিএস ও বিডিএস ব্যতীত কেউ ডাক্তার লিখতে পারবেনা’ সহ পাঁচ দফা দাবিতে একাডেমিক শাটডাউনের ঘোষণা দিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকরা।
গতকাল সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে টানা কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা। পাঁচ দফা দাবিতে দেশের অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলোতেও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এই কর্মবিরতির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে গত রোববার সকাল থেকে টানা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।
এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসক। একইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম।
চমেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার তসলিম উদ্দিন খান বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সারা দেশের মতো এখানে ধর্মঘট করছেন। আমাদের স্থায়ী চিকিৎসকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগে উচ্চতর কোর্সে অধ্যয়নরত চিকিৎসকেরা যথাসম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের (শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসক) কর্মবিরতির কারণে আমাদের হাসপাতালে সেবার কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না।
তিনি বলেন, হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। কারণ ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাড়াও আমাদের এখানে ৬০০ জন পোস্ট গ্রাজুয়েট ডাক্তার ডাক্তার আছেন। তাদের শিফট করে ডিউটি পালন করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রফেসর আছেন, আবাসিক চিকিৎসক আছেন, রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রারও আছেন।’
শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি হলো— ১. এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না—বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) এ আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন শুধুমাত্র এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সালে হাসিনা সরকার ডিপ্লোমা অব মেডিকেল ফ্যাকাল্টি ইন মেডিকেল এ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং কোর্স-ম্যাটসদেরকে বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেয়া শুরু করেছে, এই ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
২. চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) তালিকা নবায়ন করতে হবে। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি তালিকার বাইরে ওষুধ পেসক্রিপশন করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি তালিকার বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।
৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। যথা— ক) দ্রুত ১০,০০০ জন ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সকল শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠনের পূর্বের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে। খ) প্রতিবছর ৪,০০০-৫,০০০ ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে ও গ) ডাক্তারদের বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।
৪. ম্যাটস ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি কলেজসমূহ বন্ধ করে দিতে হবে। ইতিমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) পদবী রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।