চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) থেকে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে আজ রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার মপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালণ করছে শিক্ষার্থীরা। রোববার (৬ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালণ করেন তারা। শাটডাউন কর্মসূচি কারণে র বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা এ পদে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নিয়োগ না দেওয়ারও দাবি জানান। দাবি মেনে না নিলে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করা ও রাস্তা অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের স্নাতকের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট কথা- আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দালালির সাথে যুক্ত কেউ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক (ভিসি) হয়ে আসতে পারবে না। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিদিন নানাভাবে নানা জায়গায় আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসবে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ২৯ বছর, যেটা বাংলাদেশের একমাত্র ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে কীভাবে বাইরে থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া যায়? আমাদের ইন্টার্নি প্রোগ্রাম বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে, আমাদের প্রবলেম বেইজড লার্নিংগুলো, শিক্ষকদের উদ্ভাবনীগুলো অন্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে; সেখানে বাইরের অপশক্তি আমাদের ওপর প্রভাব খাটাতে চায়’।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষককে আমাদের ভিসি হিসেবে মানবো না। আবার অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ সিভাসুর ভিসি হওয়ার পাঁয়তারা করলে তাকেও মানবো না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দিতে হবে আমাদেরই শিক্ষকদের মধ্য থেকে। আগের ভিসিরা রুটিন ওয়ার্ক করেই চলে গেছেন, কোনো কাজ করেননি’।
নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগের এক দফা দাবিতে টানা পাঁচদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সিভাসুর শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেন তারা। তার আগে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর উপাচার্য নিয়োগের আবেদন জানিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। একই দাবি নিয়ে শনিবার (৫ অক্টোবর) শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সমর্থন জানিয়ে আসছেন।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জরুরি সভা ডাকেন সিভাসু’র দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামাল। উপাচার্যের সভাপতিত্বে তাঁর অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অনুষদীয় ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ), প্রক্টরসহ সিনিয়র শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।