চট্টগ্রামের সন্তান ‘ড. নিয়াজ’ ঢাবি’র নতুন উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি ঢাবির ৩০তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। ড. নিয়াজ আহমেদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) উপ-উপচার্য।

সোমবার (২৬ আগস্ট) অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ ঢাবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগে বিষয়ে ইতোমধ্যে আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সম্মতি দিয়েছেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে।

পেশাগত জীবনে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ‘অধ্যাপক’ ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি এই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি এই বিভাগেই অধ্যাপনা করছেন।

অধ্যাপক নিয়াজ ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলস সোয়ানসি, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ ও গবেষণা করে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যে একাডেমিক ও কার্যকরি ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্টের উন্নয়নে অবদান রাখছেন।

অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান :

ঢাবি ক্যাম্পাসে রাজনীতিবিমুখ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। কোনো দলের রাজনৈতিক সভা সমাবেশে তাকে দেখা যায়নি। সবসময়ই একাডেমিক বিষয়ে প্রাধান্য পাওয়ায় তিনি রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে দূরে রয়েছেন। সম্প্রতি তার ৩৫ পৃষ্ঠার জীবন বৃত্তান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়। তার তত্ত্বাবধানে বর্তমানে দেশে এবং দেশের বাইরের ১৭ জন পিএইচডি গবেষক ও ৮ জন এমফিল গবেষক গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি দুই শতাধিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও বইয়ের রচয়িতা।

অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বিখ্যাত চুনতি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্র-পিতামহ খান বাহাদুর নাসির উদ্দিন খান এবং অবিভক্ত ভারতের একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর ছিলেন। পিতামহ কবীর উদ্দিন আহমেদ খান ছিলেন আসাম-বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের ডেপুটি কালেক্টর ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট। এ কারণে, অত্র এলাকায় তাদের বাড়িটি ‘ডেপুটি বাড়ি’ হিসেবে বিশেষ পরিচিত লাভ করে।

অধ্যাপক নিয়াজ খানের বাবা ড. শফিক আহমদ খান অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ষাটের দশকের প্রথম দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণ রসায়ন বিভাগ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গত ১০ আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে ‘ব্যক্তিগত কারণের’ কথা বলেছেন ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের এই অধ্যাপক।