চবিতে ক্লাসে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা
দীর্ঘ ৭ বছর পর সবগুলো হলে আসন বরাদ্দ দিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ
আজ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্লাস শুরু হয়েছে। তিন মাস পর ক্লাসে ফেরা উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের সম্মান জানাতে চবির শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে ‘লাল ব্যাজ’ পরিধান ও পতাকা হাতে প্রার্থনা করেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সমবেত হয়ে এতে অংশ নেন। এ সময় সম্মিলিতভাবে মোনাজাত পরিচালনা করেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল হক। পাশাপাশি আজ থেকেই শুরু হয়েছে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাস।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অভূতপূর্ব সংস্কারের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আমরা এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করব। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে এর ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে এগিয়ে নেব। আজ বীর শহিদের জন্য দোয়া-প্রার্থনা করে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, যেসব শহীদদের রক্ত মারিয়ে আমরা নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি, তাদের স্মরণ করার জন্যই আমরা সমবেত হয়েছি। তাদের স্মরণ করেই যেন আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়, সে জন্যই এই আয়োজন।
এদিকে দীর্ঘ ৭ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হলে আসন বরাদ্দ দিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ। মাঝে বেশ কয়েকবার আসন বরাদ্দের নামে আবেদন জমা নিলেও বরাদ্দ দিতে পারেননি সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। তবে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার চবি উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে মাত্র ১৭ দিনের মাথায় আসন বরাদ্দ, ক্লাস-পরীক্ষা চালু, ক্লিন ক্যাম্পাসসহ বেশকিছু কাজ করে ইতিমধ্যে প্রশাসনিক দক্ষতা দেখিয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৭ জুলাই আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগের দাবি তুলেন শিক্ষার্থীরা। তোপের মুখে ১২ আগস্ট পদত্যাগ করেন ৩ মাস আগে উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়া অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এক মাস ৬ দিনের মাথায় চবির নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়।
এদিকে দীর্ঘদিন পর আবাসিক হলে আসন বরাদ্দ দিলেও বেশকিছু অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম অভিযোগ হলো- বিভাগ ভিত্তিক আসন বরাদ্দ না হওয়ায় কিছু বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনেক আসন পেলেও কিছু কিছু বিভাগ খুব বেশি আসন পায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা ক্লাস-পরীক্ষা দ্রুত শুরু করার জন্য হলগুলোতে আসন বরাদ্দের বিষয়ে খুব বেশি সময় নিতে পারিনি। তাই পুরোনো নীতিমালা অনুসরণ করেই এবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আসা অভিযোগগুলো যৌক্তিক। খুব দ্রুতই আসন বরাদ্দের ইনক্লুসিভ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.