চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ছাত্রলীগের ৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

১০

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ আরও ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন, শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমেন দত্ত (২৭), সাবেক সহসভাপতি ইয়াসিন আরাফাত (২৭), চবি আইন বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মনিরুজ্জামান (২৩), সাবেক সহসভাপতি আবরার শাহরিয়ার (২৯), সাবেক সহসভাপতি মীর্জা খবির সাদাফ খান (২৮), সাবেক আইন সম্পাদক খালেদ মাসুদ (২৭), সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম সাঈদ (৩২), সাবেক সহসভাপতি মিজান শেখ (৩১), বাংলা বিভাগের ১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের আকিব জাবেদ (২৬), ইতিহাস বিভাগের ১৯–১৯ শিক্ষাবর্ষের অনুপ সরকার আকাশ (২৬), সাবেক সহ–সম্পাদক তায়েব পাঠান (২৬), উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের তানভীর আলম আকাশ (২৪), আইন বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুজ্জামান ওমর (২৩), ইতিহাস বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ নাঈম (২৩) ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ১৮–১৯ আরাফাত রায়হান (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়েছে আরো ৩০ থেকে ৪০ জন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে চবির ২০১৯-২০ সেশনের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবু হাসান বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এই ঘটনায় মামলার তিন নম্বর আসামি চবি আইন বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মনিরুজ্জামান ক্যাম্পাসে আসলে শিক্ষার্থীরা ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। গতকাল শুক্রবার হাটহাজারী থানা তাকে আদালতে প্রেরণ করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় একজন আটক হয়েছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি বাকিদের গ্রেপ্তারের।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে মিছিল করলে অভিযুক্ত সৌমেন দত্তের নেতৃত্বে এজাহারে থাকা বাকি অভিযুক্তরা হাতে থাকা ধারালো রামদা চাপাতি, কিরিস, লোহার রড, স্ট্যাম্প ও লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময়ে সৌমেন দত্ত স্ট্যাম্প দিয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী মো. মাহাবুবুর রহমানের মাথায় আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেঁটে যায় এবং সে গুরুতর আহত হয়। এছাড়া আরেক অভিযুক্ত মোহাম্মদ নাইম কাঠের লাঠি দিয়ে ভুক্তভোগী মো. মাহাবুবুর রহমানকে এলোপাথাড়ি মেরে তার পিঠ থেঁতলে দেয়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, অন্যান্য অভিযুক্তরা হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং এলোপাথাড়ি সবাইকে মারধর করতে থাকে। এছাড়া অভিযুক্তরা আন্দোলনে থাকা নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করে। সেইসঙ্গে কোটা সংষ্কার আন্দোলন থেকে সরে না দাড়ালে তারা আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়৷

বাদি মো. আবু হাসান বলেন, সেদিন আমরা মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার হয়ে যাচ্ছিলাম। তখন অভিযুক্তরা আমাদের উপর অতর্কিত হালমা চালায়। এতে আমার বন্ধু মাহবুবর রহমান গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ১৫ জনসহ ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আমি হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেছি। বেশকিছু অভিযুক্ত নাম না জানার কারণে মামলায় উল্লেখ করা হয়নি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.