আইন না মেনে শিল্পকারখানা পরিচালনা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে: জেলা প্রশাসক

১২৫

আইন না মেনে অনিয়ম করে কেউ শিল্পকারখানা পরিচালনা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তিনি বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, নিয়ম-নীতির মধ্যে থেকেই সবাইকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে।

সোমবার (৬ মার্চ) চট্টগ্রামের ভারী ও মাঝারি শিল্পপ্রবণ এলাকায় দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক আয়োজিত জরুরী মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে ৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয় আরও অনেকে। এর আট মাস আগে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সীতাকুণ্ডে প্রতি বছরই দুর্ঘটনা ঘটছে, অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। যার বেশির ভাগেরই মানবসৃষ্ট। খুব কমই প্রকৃতিগত।

ডিসি বলেন, আমি জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাসের মধ্যে শুধুমাত্র অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে ৯টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। অভিযানে ২০ লাখ টাকার অধিক জরিমানা করেছি। এক বছরের জেল পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। আমি আসার পর একটা লক্ষ্য ছিল, এখানে যাতে কোনও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটে। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, যেসব প্রতিষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের টিম অভিযান পরিচালনা করেছে সেসব প্রতিষ্ঠানে কোনও ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুজ্জামান বলেন, এ দুর্ঘটনা রোধে আমরা একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে চাই। এর মধ্যে কিভাবে আমরা দুর্ঘটনা হ্রাস করবো, এটি মানবসৃষ্ট হোক আর প্রকৃতিগত হোক, পরিবেশের দূষণ কিভাবে রোধ করবো, দূষণ থেকে খাল-নদী রক্ষা, ভূ-গর্ভস্থ পানি কিভাবে নিম্নে যাওয়ার ব্যবস্থা রোধ করা যাবে, কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি ও পাহাড় কাটা কিভাবে রোধ করা যাবে, শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও মালিকদের মূলধনের নিরাপত্তা আমরা কিভাবে নিশ্চিত করতে পারি। এর পাশাপাশি সীতাকুণ্ড এলাকায় কিভাবে আমরা একটি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে পারবো-সে বিষয়ে সবার মতামত আশা করছি।

কর্ণফুলী, আনোয়ারা, মিরসরাই, হাটহাজারী এলাকায়ও শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। সে এলাকা নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জরুরী মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৩, চট্টগ্রামের এসপি মোহাম্মদ সুলাইমান, সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম আল মামুন, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহাদাৎ হোসেন, সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমদ, ভাটিয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাজিম উদ্দিন, সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মনির আহমদ প্রমূখ।

সভায় ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, বিস্ফোরক পরিদর্শন, চেম্বার, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ প্রতিনিধি, শিপ ব্রেকার্স, বিভিন্ন কলকারখানার মালিক, পরিচালক, কর্মকর্তা ও শিল্পউদ্যোক্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.