ধোপাছড়িতে বন্দর কর্মচারী অপহরণের অভিযোগ: মুক্তিপণ দাবী
পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের হাতে চন্দনাইশের দুর্গম ধোপাছড়িতে অপহরণের শিকার হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্মচারী। গত শুক্রবার বিকালে চন্দনাইশের খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়কে অপহরণের এ ঘটনা ঘটে। অপহৃতের নাম মো. জালাল উদ্দীন (৪০)। জালাল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগের সিনিয়র আউটডোর অফিসার বলে জানা গেছে।
জানা যায়, পটিয়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুল জলিলের পুত্র মো. জালাল উদ্দীন গত বৃহস্পতিবার বিকালে চন্দনাইশ উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল ধোপাছড়ি ইউনিয়নের ছাপাছড়ি এলাকায় খালার বাড়িতে বেড়াতে যান।
সেখানে রাত্রিযাপনের পর পরদিন শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলযোগে খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়ক হয়ে ধোপাছড়ি থেকে ফিরছিলেন। তারা সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোরশেদুল আলমের বাগান সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছলে একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী তাকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি আটকায় এবং চালককে মারধর করে মো. জালাল উদ্দীনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে পর দিন ১০ ডিসেম্বর অপহৃত জালালের বড় ভাই নাজিম উদ্দিন করিম চন্দনাইশ থানায় অজ্ঞাতনাম ৭/৮ জনের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে তিনি অপরহরণকারীরা প্রথমে ফোনে ৫০ লাখ ও পরে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ করেন। অন্যথায় অপহৃত জালালকে হত্যা করার হুমকী দেয় বলে জিডেতে উল্লেখ করা হয়।
অপহৃত জালালের সহকর্মী মো. শাহাদাত হোসেন জানান, অপহরণকারীরা জালালের স্ত্রীকে ফোন করে জানায়, তার স্বামী মোটরসাইকেল চালক সমিতির সভাপতির সাথে বেয়াদবি করায় তারা তাকে নিয়ে গেছে। জালাল উদ্দীন স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর ‘এ’ ব্লকে বাস করেন। অপহরণকারীরা ইতোমধ্যে ফোনে পরিবারের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানান তিনি।
ধোপাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলীম জানান, খানহাট–ধোপাছড়ি–বান্দরবান সড়ক থেকে গত শুক্রবার বিকালে জালাল উদ্দীন নামে চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মচারী অপহরণ হওয়ার খবর পেয়ে বিষয়টি তিনি চন্দনাইশ থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, জালাল উদ্দীন নামে ওই ব্যক্তিকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে বিষয়টি বান্দরবান সেনাবাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অপহৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে অপহৃতকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
দুর্গম ধোপাছড়ি থেকে বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। গত ১৫ অক্টোবর দেলোয়ার হোসেন ও নুর হোসেন নামে ২ ব্যক্তি, ৯ মার্চ মো. মোজাম্মেল হক নামে এক ঠিকাদারকে অপহরণ করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। পরে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.