ফখরুলের পাকিস্তান প্রীতি ও লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা বাধা একসূত্রে গাঁথা: হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁওয়ে পাকিস্তান ভালো ছিলো বলে বক্তৃতা দিয়েছেন। আবার সম্প্রতি বিএনপি ঢাকায় সমাবেশে লাঠি ও রড়ের মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে হাজির হয়েছেন। লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে। এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অশ্রদ্ধা করেছে। তিনি বলেন, মির্জা সাহেবের পাকিস্তান প্রীতি আর লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা বাঁধা একই সূত্রে গাঁথা।
মন্ত্রী শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম চত্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে হরিজন সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত উপহারের টাকা বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
বিএনপির বিভাগীয় পর্যায়ের সমাবেশ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা যদি বিভাগীয় পর্যায়ে এগুলো করে তাহলে জনগণ সমুচিত জবাব দেবে। তিনি বলেন, বিএনপি ইদানিং সব জায়গায় বিশৃংখলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রয়োজনে নিজেদের কর্মীকে মেরে হলেও বিশৃংখলা করা। মুন্সিগঞ্জে তারা নিজেদের কর্মীকে নিজেরা মেরে বিশৃংখলা করেছে। আবারও করার চেষ্টা করবে। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করলে জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার কঠোর হাতে দমন করবে।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচন বিষয়ক অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ হওয়ার পর তার কাছে সবাই মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসতো। এ আসার মাঝে কেউ একজন হঠাৎ মোনাজাত ধরেছে। এসময় মুসলমান হিসেবে মোনাজাতে শরীক না হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে অন্যরা ভাববে অন্য ধর্মের বা বিধর্মী। সেটা ভেবে জেলা প্রশাসক মোনাজাত ধরেছে। মোনাজাতে কে কি বললো তার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের উপর বর্তায় না। তিনি বলেন, প্রয়োজনে এ ঘটনার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা যেতো। তার বক্তব্য নেয়া যেতো। প্রদত্ত জবাব সন্তোষজনক না হলে তারপরে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়। কিন্তু তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে একটি মোনাজাতকে উপলক্ষ করে কিছু পত্রিকার শিরোনাম দেখে অত্যন্ত তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিলে ভাল হতো।
এর আগে মন্ত্রী হরিজন সম্প্রদায়ের মাঝে নগদ টাকা বিতরণ করেন। এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, সরকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে আছে। সকলের মঙ্গলের জন্য সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, যখনি কোন ধর্মীয় উৎসবের সময় আসে তখন কিছু উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি গন্ডগোল পাকানোর অপচেষ্টা করে। এটা শুধু হিন্দু ধর্মের বা অন্য ধর্মের প্রতি হয়- তা নয়। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে হামলা করেছে। এসব অপশক্তি সকলের শত্রু। সম্মিলিতভাবে এদের প্রতিহত করতে হবে। এদেশের মাটিতে কোন সাম্প্রদায়িক অপশক্তির স্থান হবে না। সরকার এবং দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময় সকল সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে বলে এসময় তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে হরিজন সম্প্রদায়ের ১ হাজার সদস্যের মাঝে প্রতিজনকে ১ হাজার টাকা করে উপহার প্রদান করা হয়। একই অনুষ্ঠানে জেলা সমাজসেবা অফিস কর্তৃক ১৮১ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মধ্যে প্রতি সংগঠনকে ৩২ হাজার টাকা করে ৫৮ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া ১৭৫ জন ব্যক্তিকে প্রতিজনকে ৫ হাজার করে ৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার বিশেষ অনুদান প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এর সভাপতিত্বে এসময় মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডর বীর মুক্তিযোদ্ধা সারোয়ার কামাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণ, জেলা সমাজসেবা অফিসার মো. ওয়াহিদুল আলম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানসহ মহানগর ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে মিলিত হন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.