প্রশাসনের কঠোর নজরদারীতে জঙ্গল সলিমপুর
সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে সব ধরনের অবৈধ মালামালের প্রবেশ ঠেকাতে প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।
গতকাল বুধবার (২৪ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উচ্চ চাপবিশিষ্ট চট্টগ্রাম রিং-মেইন গ্যাস পাইপলাইনের ওপর দিয়ে জঙ্গল সলিমপুরের ছিন্নমূল ও আলীনগর যাওয়ার বিকল্প পথগুলো বন্ধ করে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
জঙ্গল সলিমপুরের অবৈধ বসতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার (২৩ আগষ্ট) টানা ৬ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে জঙ্গল সলিমপুরের বাসিন্দারা। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরাতে ব্যার্থ প্রশাসন আ্যাকশনে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাংচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে গত মঙ্গলবার রাতে ৬টি মামলা করে পুলিশ। এতে ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৪০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
সীতাকুণ্ড থানা সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার জঙ্গল সলিমপুর ও আলিনগরের বিক্ষুব্ধ অবৈধ বাসিন্দারা ৬ ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গত বুধবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য খ্যাত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা জঙ্গল সলিমপুরের প্রবেশদ্বারে দুটি নিরাপত্তা চৌকি ও ১৫টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘সরকারের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে জঙ্গল সলিমপুর ও আলী নগরের উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। আমরা ১৫টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও দুটি নিরাপত্তা চৌকি নির্মাণের কাজ শুরু করেছি।
জঙ্গল সলিমপুরে জেলা প্রশাসনের অভিযানে ৩৮ মামলা:
প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে জঙ্গল সলিমপুর। বুধবার সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পর থেকেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ৩৮টি মামলায় ৩১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, জঙ্গল সলিমপুরগামী ও সেখান থেকে বের হওয়া প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন আটক করে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করা হয়। জঙ্গল সলিমপুরে প্রবেশকারী সন্দেহভাজন প্রত্যেককে জিজ্ঞাসা করা হয়। বহিরাগতদের সলিমপুর প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।
চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা বলেন, সরকারের পরিবেশবান্ধব মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জঙ্গল সলিমপুরে যেন আর কোনও অবৈধ বসতি গড়ে না উঠে এবং সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড ও ভূমিদস্যুতা প্রতিরোধে জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শিফটে ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে থাকবে সলিমপুর।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.