কাবুলে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ: শিশুসহ অন্তত ১৩ জন নিহত
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে শিশুসহ অন্তত ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিমা সৈন্য-নাগরিক ও তাদের আফগান সহযোগীদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপক তোড়জোড়ের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটলো।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অন্তত দুই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের বিষয়টি এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জানানো হয়েছে।
দেশটির ক্ষমতাসীন নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবানের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে সন্দেহভাজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর বিস্ফোরণে শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণের পর প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রক্তমাখা কাপড়ে আহতদের দুই চাকার বাহনে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নারী, পুরুষ ও শিশু কেউ কেউ মাথায় ব্যান্ডেজ পরিহিত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন।
বিমানবন্দরের বাইরে হামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনাস্থলে বলেছেন, বিস্ফোরণটি ‘সত্যিই শক্তিশালী’ ছিল। রয়টার্সের শেয়ার করা ফুটেজে ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা যেখানে ছিলাম সেখানে হঠাৎ একটি বিস্ফোরণ ঘটেছিল।’
তিনি বলেন, আশেপাশের এলাকায় ‘কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ জন’ দেখেছেন এবং কিছু ভুক্তভোগীকে ‘বিদেশী বাহিনী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আহতদের এখানে স্ট্রেচারে বহন করেছি। আমার কাপড় সম্পূর্ণ রক্তাক্ত।’
বিবিসি জানিয়েছে, বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের প্রবেশদ্বারে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সন্ত্রাসী হামলার হুমকির কারণে সতর্কতা হিসেবে বন্ধ করে দেওয়া তিনটি গেটের একটি অ্যাবে গেট। দেশ ছাড়তে মরিয়া হাজারো আফগান সেখানে অবস্থান করছেন।
ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি জোনাথন বিয়ালে বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরে প্রথম বিস্ফোরণের পরপর দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরণের পাশাপাশি সেখানে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গোলাগুলিও হয়েছে। জোড়া এই বিস্ফোরণ বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের কাছের প্রবেশদ্বারে ঘটেছে; যেখানে হাজার হাজার আফগান গত ১২ দিন ধরে অবস্থান করছেন।
বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণে হতাহতদের মধ্যে মার্কিন সৈন্য এবং নাগরিকও আছেন বলে নিশ্চিত করেছে ওয়াশিংটন। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরে বোমা বিস্ফোরণে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক এবং বেসামরিক নাগরিকরাও হতাহত হয়েছেন। সেখানে ‘জটিল হামলার’ কারণে মার্কিনিরা হতাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আল-জাজিরার সংবাদদাতা শার্লট বেলিস কাবুল থেকে জানিয়েছেন, কারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হওয়া যায়নি। তথাকথিত ইসলামিক স্টেট অফ খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি) বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কয়েক ঘণ্টা আগে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস হিপি বিবিসিকে বলেন, কাবুল বিমানবন্দরে মারাত্মক হামলার চেষ্টা হতে পারে বলে ‘খুবই বিশ্বাসযোগ্য‘ খবর আছে তার কাছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এমন কিছু ঘটতে পারে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.