পতেঙ্গা সৈকতে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা: মেয়র ডা. শাহাদাত
চট্টগ্রাম, ১৭ কার্তিক (৩১ অক্টোবর):
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রামের অমূল্য সম্পদ। বারবার সতর্ক করার পরও যারা সৈকত দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুক্রবার সী-বিচ এলাকায় চসিকের উচ্ছেদ অভিযানের সময় মেয়র বলেন, “পতেঙ্গা দেশের ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য প্রধান আকর্ষণ। সৈকতকে সুশৃঙ্খল ও সুন্দর রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।”
তিনি আরও বলেন, “বিচ এলাকায় কেউ ওয়াকওয়ে বা জনসাধারণের পথ দখল করে টেবিল-ছাতা বসিয়ে ব্যবসা করতে পারবে না। পর্যটকদের জোর করে খাবার খাওয়ানো বা অতিরিক্ত বিল চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এসব কর্মকাণ্ড সৈকতের সৌন্দর্য ও ভাবমূর্তি নষ্ট করছে, তাই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
মেয়র জানান, সৈকতের পেছনের অংশে পর্যাপ্ত দোকান ও খাবারের সুযোগ রয়েছে, তাই মূল সৈকতে স্থায়ী স্থাপনা বা বসতি গড়ে তোলা জনস্বার্থবিরোধী। তিনি বলেন, “আমরা আগে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়েছি এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এরপরও যারা নিয়ম ভঙ্গ করছে, তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন, সিডিএ ও টুরিস্ট পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
এর আগে মেয়র ইউএনডিপি বাংলাদেশ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নেন।
তিনি বলেন, “পতেঙ্গা আমাদের সবচেয়ে বেশি পরিদর্শিত উপকূলীয় এলাকা। কিন্তু প্লাস্টিক দূষণ এখানকার জীববৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যের জন্য বড় হুমকি। আমরা চাই, দর্শনার্থীরা যেন নিজেদের দায়িত্বে সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখে এবং সাগরকে সুস্থ রাখে।”
ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সরদার এম. আসাদুজ্জামান বলেন, “পতেঙ্গা শুধু একটি সৈকত নয়, এটি চট্টগ্রামের গর্বের প্রতীক। প্রতিদিন এখানে জমা হওয়া প্লাস্টিক বর্জ্য সামুদ্রিক প্রাণী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। এ সমস্যা মোকাবেলায় সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।”
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৮ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার মধ্যে চট্টগ্রামে দৈনিক প্রায় ৩,০০০ টন বর্জ্য সৃষ্টি হয়। এর বড় অংশ কর্ণফুলী নদী ও বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশে জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করছে।
দিনব্যাপী কর্মসূচিতে তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা সৈকত পরিষ্কার কার্যক্রমে অংশ নেন।
এই উদ্যোগটি ইউএনডিপির “প্লাস্টিক সার্কুলারিটি প্রজেক্ট”-এর অংশ, যা দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির লক্ষ্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টাঙ্গাইলে ১৫,০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য পুনরুদ্ধার ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য সম্পদে রূপান্তর।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.