সপ্তাহের ব্যবধানে হালদায় আরো একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার

চট্টগ্রামের হালদা নদী থেকে আরও একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার হয়েছে। বালি উত্তোলনকারী ড্রেজারের (খনকযন্ত্র) আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন হালদা গবেষকরা। এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি হালদা নদী থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়।

আজ বুধবার দুপুরে রাউজান উপজেলার আজিমের ঘাট এলাকায় নদীতে মৃত ডলফিনটি ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ, নৌ পুলিশ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিচার্স ল্যাবরেটরির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটি উদ্ধার করেন। এর আগে, সর্বশেষ গত ৫ ফেব্রুয়ারি হালদা নদী থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে গত আট বছরে হালদা নদী থেকে ৪৫টি ডলফিনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।

ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘প্রায় ৬০ ইঞ্চি দীর্ঘ ও ২৭ ইঞ্চি প্রস্থের মৃত ডলফিনটির ওজন প্রায় ১৫ কেজি। আমাদের ধারণা, দুই-তিন দিন আগে সেটির মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহ একেবারে পচে গেছে। মাথা ও পেটের অংশে আমরা আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। পচে যাওয়ায় ডলফিনটিকে হালদাপাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। মাটিচাপা দেওয়ার আগে রাউজান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, নৌ পুলিশের প্রতিনিধি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সদস্যরা মিলে সুরতহাল সম্পন্ন করেন জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে তথ্য পেয়েছি, হালদা নদীতে সাম্প্রতিক সময়ে বালি উত্তোলনের পরিমাণ বেড়েছে। ড্রেজারের উৎপাত আবার বেড়েছে। ধারণা করছি, ড্রেজারের আঘাতে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে।’

গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিনের বিচরণ আছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে। ২০১৭ সাল থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর ডলফিন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন গবেষকরা। তখন থেকে হালদা ও কর্ণফুলীতে মৃত ডলফিনের সংখ্যা গণনা শুরু হয়। কর্ণফুলী ও হালদা নদীপাড়ের বাসিন্দারা স্থানীয়ভাবে একে হুতুম বা ‍শুশুক নামে অভিহিত করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.